মাধবপুর, ২৮ অক্টোবর : হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী মুর্শেদ খানের মালিকাধীন নোয়াপাড়া চা বাগানে দুই বছর ধরে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চা কারখানা বন্ধ রয়েছে। গ্যাস না থাকার কারণে চা পাতা শুকানো সম্ভব হচ্ছে না। উৎপাদন বন্ধ থাকায় বাগান প্রতিবছর বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে। এই পরিস্থিতি বাগানের প্রায় দুই হাজার শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর জীবন ও জীবিকা সংকটে ফেলেছে।
শ্রমিকরা জানান, আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। বাগানে কাজ করেই আমাদের পরিবার চালাই। দুই বছর ধরে গ্যাস সংযোগ না থাকার কারণে আমরা অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছি। এখন বকেয়া টাকা পরিশোধ করা হলেও সংযোগ দেওয়া হয়নি। সংযোগ না দিলে আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামব। তারা আরও বলেন, “গ্যাস না থাকায় একটি শিল্প ধ্বংসের পথে। যদি বাগান চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বাগানের সাত হাজার শ্রমিক ও তাদের পরিবার মারাত্মক জীবন সংকটে পড়বে।
নোয়াপাড়া চা বাগানের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কমেড নায়েক বলেন, গ্যাস সংযোগ দ্রুত দেওয়া না হলে শ্রমিকরা বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার কারণে কারখানার যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার পথে। বাগান চালু করতে গ্যাস সংযোগ পুনঃস্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করা হলেও এখনও কোন সমাধান মেলেনি। তিনি আরও বলেন, শ্রমিকরা শুধু তাদের জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা চাইছেন না, একই সঙ্গে বাগানের উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে চাইছেন।
সেক্রেটারি মনি বাউড়ি জানান, গ্যাস সংযোগ না থাকায় শুধু শ্রমিকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না, বাগানের উৎপাদনও বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ সময়ের এই পরিস্থিতি চা শিল্প ও স্থানীয় অর্থনীতির জন্য চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে বাগানের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শ্রমিকদের জীবন ও পরিবারও মারাত্মক সংকটে পড়বে।
সাবেক ইউপি সদস্য শ্যামল বুনার্জি জানান, শ্রমিক অসন্তোষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদি গ্যাস সংযোগ না দেওয়া হয়, শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় আন্দোলনে নামবেন। নোয়াপাড়া চা বাগানের গ্যাস সংযোগ পুনঃস্থাপন ছাড়া চা শিল্পের স্বাভাবিক কার্যক্রম এবং শ্রমিকদের জীবন সংরক্ষণ সম্ভব নয়। দীর্ঘদিন কারখানা বন্ধ থাকায় বাগানের যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি চা উৎপাদনের চক্রও বিঘ্নিত হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান না হলে শুধু শ্রমিকরাই নয়, পুরো চা শিল্প ও স্থানীয় অর্থনীতিই মারাত্মক প্রভাব পড়েছে । তাই নোয়াপাড়া চা বাগানের গ্যাস সংযোগ দ্রুত পুনঃস্থাপন করা একান্ত জরুরি। দ্রুত পদক্ষেপ নিলে শ্রমিকরা তাদের কাজ পুনরায় শুরু করতে পারবে এবং বাগান স্বাভাবিকভাবে উৎপাদন চালু করতে সক্ষম হবে। এর মাধ্যমে চা শ্রমিকদের জীবন এবং স্থানীয় অর্থনৈতিক অবস্থা সুরক্ষিত থাকবে।
জালালাবাদ গ্যাস এন্ড টিডি সিস্টেম লিমিটেড হবিগঞ্জ শাহজিবাজার ম্যানেজার হুসাইন মোঃ জুনায়েদ বলেন ,নোয়াপাড়া চা বাগানের সব বকেয়া পরিশোধ রয়েছে। ঢাকার অনুমোদন পেলেই বাগানের সংযোগ দেওয়া হবে। আমরা উর্ধতন কর্মকর্তাদের অনুমোদনের অপেক্ষা ও নির্দেশনায় আছি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan

মাধবপুর, (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :